আজ-
Bangla Live Radio Station Theme

Labels

Google Add

চারবারের চেষ্টায় যৌনপল্লি থেকে পালালো তরুণী

নিজস্ব প্রতিনিধি
Sunday, September 20, 2015
Last Updated 2022-10-27T06:20:43Z
Google Add Code Here
এর আগে তিনবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। বেদম মারও জুটেছে কপালে। শরীর থেকে সে চিহ্ন এখনো মুছে যায়নি। তবে হাল ছেড়ে দেয়নি। চতুর্থবারের চেষ্টায় ঠিকই যৌনপল্লির চৌকাঠ মাড়িয়ে পালিয়ে গেল তরুণী। ঘটনাটি ভারতের। মেয়েটি যখন পালিয়ে গেল তখনও সূর্যের আলো ফোটেনি। ছোট ঘরটির ভিতর তো পুরোই অন্ধকার। বিছানায় পাশে নিঃসাড়ে ঘুমোচ্ছেন এক প্রবীণা। কিন্তু সামান্য নড়াচড়াতেও তাঁর ঘুম ভেঙে যেতে পারে। তাই উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ওই তরুণী শুক্রবার কাক ডাকা ভোরে দিনহাটার যৌনপল্লিতে বিছানা ছাড়েন অতি সন্তর্পণে।



এর আগে তিনবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। বেদম মারও জুটেছে কপালে। শরীর থেকে সে চিহ্ন এখনো মুছে যায়নি। তবে হাল ছেড়ে দেয়নি। চতুর্থবারের চেষ্টায় ঠিকই যৌনপল্লির চৌকাঠ মাড়িয়ে পালিয়ে গেল তরুণী। ঘটনাটি ভারতের।

মেয়েটি যখন পালিয়ে গেল তখনও সূর্যের আলো ফোটেনি। ছোট ঘরটির ভিতর তো পুরোই অন্ধকার। বিছানায় পাশে নিঃসাড়ে ঘুমোচ্ছেন এক প্রবীণা। কিন্তু সামান্য নড়াচড়াতেও তাঁর ঘুম ভেঙে যেতে পারে। তাই উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ওই তরুণী শুক্রবার কাক ডাকা ভোরে দিনহাটার যৌনপল্লিতে বিছানা ছাড়েন অতি সন্তর্পণে।


আগে তিন বার ধরা পড়েছেন। আর ধরা পড়তে চান না। তাই দরজা খোলার আগে ভাল করে দেখে নেন ওই প্রবীণাকে। এই মহিলাকে রাখাই হয়েছে তাঁকে চোখে চোখে রাখার জন্য। কিন্তু তিনি নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছেন দেখে আর পালানোর সুযোগ ছাড়েননি ওই তরুণী। সামান্য যেটুকু টাকাপয়সা ঘরে রয়েছে, তা নেওয়ার চেষ্টাও করেননি। সাবধানে কাঠের দরজার ছিটকিনি খুলে একরকম নিঃশব্দে পাল্লা দু’টো সামান্য ফাঁক করে বাইরে বেরিয়ে পড়েন। চটি জোড়া ছিল হাতে। পাশে সার সার এমনই ছোট ছোট ঘর। সামনে তালা লাগানো লোহার গেট। সাড়ে চার ফুটের মতো উঁচু। পা টিপে টিপে সেই গেটের কাছে গিয়ে দেখলেন, সরু গলির উল্টো দিকের বাড়ির দরজা জানালাগুলোও বন্ধ। আর দেরি করেননি। গেটটি শক্ত করে ধরে তা বেয়ে উঠে যান। গেট পেরিয়েই গলির রাস্তা। পা টিপে টিপেই সেই গলি পার হয়ে বড় রাস্তায় পৌঁছে হাঁফ ছাড়েন তিনি। কিন্তু কোন দিকে যাবেন জানতেন না। এ বার চটি পরে বাঁ দিকে দৌঁড়াতে শুরু করেন। তারপরে হনহন করে হাঁটা। প্রায় ত্রিশ মিনিট পরে লোকালয় পেয়ে সেখানেই বসে পড়েন। তখন বেশ আলোও ফুটে গেছে। জানতেন না, সেটাই দিনহাটার কলেজ হল্ট। লোকজন এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করতেই ভেঙে পড়েন কান্নায়।




তখন জানা যায়, বসিরহাটের ওই তরুণী খুবই গরিব ঘরের মেয়ে। বাবা দিনমজুর। তাই নিজেই কিছু রোজগারের চেষ্টা করছিলেন ওই তরুণী। তাতেই তাঁর সঙ্গে অাগস্টের শেষের দিকে কালু শেখ নামে এক ব্যক্তির যোগাযোগ হয়। কালু তাঁকে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। ১ সেপ্টেম্বর কালুর সঙ্গেই ওই তরুণী শিয়ালদহে পৌঁছেন। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে চলে যাওয়া হয় সোজা কোচবিহার। ঠাঁই হয় দিনহাটার যৌনকর্মীদের পল্লিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা নারী পাঁচার রুখতে সক্রিয় একটি সংগঠনের কর্মী এলাকার বাসিন্দা জ্যোৎস্না বর্মনকে খবর দেন। জ্যোৎস্নাদেবী তাঁদের সংগঠনের আর এক সদস্য নবনীতা চক্রবর্তীকে খবর দেন। এরপরে তাঁরাই ওই তরুণীকে পুলিশের কাছে নিয়ে যান। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তরুণীর হাতে, পিঠে লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভয়ে তিনি এতটাই সিঁটিয়ে রয়েছেন যে, ভাল করে কিছু বলে উঠতে পারছে না। কিছু জিজ্ঞেস করলেই শিউরে উঠে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করছেন। পুলিশের সন্দেহ, বিক্রি করে দিতেই দুষ্কৃতীরা ওই তরুণীকে যৌনপল্লিতে নিয়ে যায়। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, ”ঘটনার তদন্ত চলছে।”

ওই তরুণী বলেন, ”ভেবেছিলাম জীবনটা শেষ হয়ে গেল। কোনও রকমে পালিয়েছি। এখন বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে চাই।”

মেয়েটির বাবা-মা’কে পুলিশ খবরও দিয়েছে। নবনীতা দেবী বলেন, ”দিন-রাত ওই কিশোরীর সঙ্গে অমানুষিক অত্যাচার করা হয়েছে। একাধিক দুষ্কৃতী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে মনে হচ্ছে।” স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনই দেশের কোন না কোন তরুণী, কিশোরী এভাবে যৌনপল্লিতে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অন্ধকার কুঠুরিতে গিয়ে নিভে যাচ্ছে একটি জীবন প্রদীপ। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।
iklan
মন্তব্য
  • Stars Rally to Beat Predators in Winter Classic at Cotton Bowl

Google Add